জেনে নিন নিরাপদে থাকার সঠিক উপায় - ইসলামিক পিএলপি ফাইল

জেনে নিন নিরাপদে থাকার সঠিক উপায়

জেনে নিন নিরাপদে থাকার সঠিক উপায় - ইসলামিক পিএলপি ফাইল


১। রাত্রিকালে ঘরের দরওয়াজা জানালা বন্ধ করিবার পূর্বে ভালরূপে লক্ষ্য কর , ঘরের মধ্যে কোথায়ও কোন বিড়াল বা কুকুর লুকাইয়া রহিল কি না । কারণ , কুকুর বা বিড়াল না তাড়াইয়া দরওয়াজা বন্ধ করিলে জান ও মালের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রহিয়াছে । আর কোন ক্ষতি না করিলেও রাত্রিভর খট্‌খট্ শব্দ করিয়া ঘুমের ব্যাঘাত ঘটান কম ক্ষতি নহে ।

২। কিতাব - পত্র এবং কাপড় - চোপড় মাঝে মাঝে রৌদ্র দিবে , নচেৎ পোকায় কাটিয়া নষ্ট করিয়া ফেলিতে পারে ।

৩। ঘর - দরজা পরিষ্কার - পরিচ্ছন্ন রাখিবে । ঘরের আসবাব - পত্র যথাযথ স্থানে গুটাইয়া সাজাইয়া রাখিবে , শৃঙ্খলার সহিত রাখিবে ।

৪। স্বাস্থ্য রক্ষার্থে দৈনন্দিন কিছু শারীরিক পরিশ্রম করা দরকার । বেশী আরাম প্রিয় হইলে স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার আশংকা । এই জন্য মেয়েদের পক্ষে অন্ততঃ যাতায় ডাল ভাংগা অথবা আটা পিষা , ঢেঁকিতে ধান ভানা বা কালেহে কোন দ্রব্য কুটা এবং চরখায় সূতা কাটা ইত্যাদি অতি উত্তম ব্যায়ামের ও লাভের কাজ ইহাতে স্বাস্থ্য ভাল থাকে ।

৫। কাহারো সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়া বিনা অনুমতিতে ঘরে বা কামরায় ঢুকিও না এবং সাক্ষাৎ করিতে বেশীক্ষণ বিলম্ব করিও না বা কথা বলিও না , যদ্দ্বারা তাহার বিরক্তি বা কাজের ক্ষতি হয় ।

৬। ব্যবহারিক আসবাব - পত্র যথাস্থানে রাখার ব্যাপারে ঘরের সকলেরই উচিত শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রত্যেক বস্তু এইরূপ নির্দিষ্ট স্থানে রাখিও যেন কাজের সময় তালাশ করিতে না হয় । নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট বস্তু না রাখিলে অনেক সময় অযথা হয়রান হইতে হয় । অতএব , তোমার নিজস্ব বস্তুও শৃঙ্খলা মত রাখ , প্রয়োজন মত হাত বাড়াইলেই যেন পাওয়া যায় ।

৭। চৌকি , পীড়ি , লাঠি , দা , খন্তা , কাচি , বদনা , বাসন , কলস , ইট - পাথর প্রভৃতি রাস্তার উপর ছড়াইয়া রাখিও না । অনেক সময় অন্ধকারে বা কোন সময় দিনের বেলায়ও চলার সময় হোঁচট খাইয়া যখম হইতে পারে এবং বে - জায়গায় চোট লাগিতে পারে ।

৮। তোমাকে যদি কেহ কোন কাজের আদেশ করে , তবে তাহা শুনা মাত্রই তুমি জ্বি - হাঁ বা জ্বি - না বা আচ্ছা ইত্যাদি যে কোন একটি হাঁ - সূচক বা না - সূচক শব্দ বলিয়া প্রতি - উত্তর দিও । অন্যথায় কাজের আদেশ দাতার মনে অশান্তি থাকিয়া যাইবে যে , তুমি হয়ত শুনিয়াছ এবং কাজ করিবে । অথচ তুমি হয়ত শুন নাই বা শুনিয়াছ কিন্তু কাজ করার ইচ্ছা নাই । এমতাবস্থায় আদেশদাতা অনর্থক তোমার আশায় অপেক্ষা করিয়া কষ্ট পাইতে থাকিবে । ইহা বড়ই অভদ্রতার কথা ।

৯। খাদ্যদ্রব্যে নিমক সর্বদা পরিমাণের চেয়ে সামান্য কম দিও । কেননা , কম হইলে উহার প্রতিকার অত্যন্ত সহজ , কিন্তু নিমক বেশী হইলে উহার প্রতিকার অসম্ভব ।

১০। শাক , তরকারী বা ডাইলের মধ্যে মরিচ ছিঁড়িয়া ছিঁড়িয়া দিও না বরং পিষিয়া দিও । কেননা , শিশুদের মুখে মরিচের টুকরা লাগিলে আগুন ধরার মত যন্ত্রণা বোধ করিবে ।

১১। অন্ধকারে পানি পান করিতে হইলে হয় ত বাতি জ্বালাইয়া নিও , না হয় এক খন্ড কাপড় পানির পাত্রের মুখে রাখিয়া পান করিও । কেননা , কোন বিষাক্ত পোকা - মাকড় পানির মধ্যে থাকিতে পারে ।

১২। শিশুদিগকে অধিক হাসাইবার জন্য আদর করার ছলে উপরের দিকে নিক্ষেপ করিয়া খেলিও না , কিংবা জানালার মধ্যে দিয়া লটকাইয়া ধরিও না , হয়ত পড়িয়া গিয়া হাসির স্থলে ফাঁসী হইয়া যাইতে পারে । তদ্রূপ শিশুদের পেছনে থাকিয়া হাসাইয়া হাসাইয়া দৌড়াইও না , হয়ত পড়িয়া গিয়া হাত - পা ভাংগিতে পারে ।

১৩। বরতন খালি হইলে উহা ধুইয়া উল্টা করিয়া রাখিও । পুনরায় ব্যবহার করিবার সময় আবার ধুইয়া ব্যবহার করিও ।

১৪। বরতন মাটিতে রাখিয়া খানা বাড়িলে উহার নীচের দিকটা তোয়ালে বা নেকড়া ইত্যাদি দ্বারা মুছিয়া দিও , অন্যথায় দস্তরখানায় মাটি লাগিয়া দস্তরখানায় বা বিছানায় দাগ লাগিতে পারে ।

১৫। কাহারো বাড়ীতে মেহমান হইয়া তুমি বাড়ীর মালিককে ( মেজবানকে ) কোন খাবার ফরমায়েশ দিও না । হয়ত সাধারণ বস্তুরই ফরমায়েশ দিয়াছ , কিন্তু উহা জোটাইতে না পারিলে অথবা সময় মত তৈয়ার করিয়া দিতে না পারিলে বাড়ীওয়ালা মনে কষ্ট পাইবে এবং লজ্জিত হইবে ।

১৬। যে স্থানে তুমি ছাড়াও অন্য লোক বসা আছে , তথায় বসিয়া থুথু ফেলিও না বা নাক ঝাড়িও না ; বরং প্রয়োজন মত এক পার্শ্বে গিয়া হাজত পুরা করিয়া আস । কেননা , লোকের মধ্যে বসিয়া থুথু ফেলিলে ঘৃণার উদ্রেক হইয়া থাকে । ইহা বড়ই বদ অভ্যাস ।

১৭। খাইতে বসিয়া এমন কোন বস্তুর নাম উল্লেখ করিও না যাহা শুনিয়া অপরের মনে ঘৃণার উদ্রেক হয় । অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাজুক তবিয়তের লোকের ইহাতে বড় কষ্ট হইয়া থাকে ।

১৮। রোগীর নিকট বসিয়া বা রোগীর কোন আত্মীয়ের নিকট বা রোগীর বাড়ীর লোকের নিকট এমন কোন কথা বলিও না যাহাতে রোগীর জীবনে হতাশা আসিতে পারে । হতাশা ব্যঞ্জক কথা বলিলে অনর্থক মন ভাংগিয়া পড়িতে পারে । সতুরাং রোগীর যাহাতে মনোবল ভাংগিয়া না পড়ে সেরূপ কথাই বলিবে । যেমন , “ খোদার ফজলে ভাল হইয়া যাইবে , ভয়ের কোন কারণ নাই ” ইত্যাদি ।

১৯। কাহারো সম্বন্ধে কোন গোপনীয় কথা বলিতে হইলে এবং যাহার সম্বন্ধে বলা হইতেছে , সে তথায় উপস্থিত থাকিলে চোখে কিংবা হাতে তাহার দিকে ইশারা করিও না , কেননা ইহাতে অনর্থক তাহার মনে সন্দেহ হইতে পারে । ইহা তখনকার কথা , যখন সেই গোপনীয় বিষয়ের কথা বলা শরীতঅত মত দুরুস্ত হয় । কিন্তু যদি শরীঅত মত দুরুস্ত না হয় , তবে তেমন আলাপ করাই গোনাহের কাজ ।

২০। কথা বলার সময় অধিক হাত নাচাইও না ।

২১। কাপড়ের আঁচল বা জামার আস্তিন দ্বারা নাক মুছিও না ।

২২। জুতা , কাপড় ও বিছানা ইত্যাদি ঝাড়িয়া মুছিয়া ব্যবহার করিও । কেননা উহার মধ্যে বিষাক্ত পোকা - মাকড় থাকিতে পারে ।

২৩। কাহারো কাপড়ের নীচে গুপ্ত স্থানে ফোঁড়া , বাঘী হইলে তুমি এত তলাইয়া জিজ্ঞাসা করিও না যে , “ কোথায় ফোঁড়া হইয়াছে ” ইহাতে অনর্থক তাহাকে লজ্জা দেওয়া হয় ।

২৪। রাস্তার উপর বা দরওয়াজার উপর বসিও না , তোমার এবং যাতায়াতকারী সকলেরই অসুবিধা হইতে পারে ।

২৫। শরীরে এবং কাপড়ে দুর্গন্ধ হইতে দিও না । কাপড় যদি অতিরিক্ত ধোয়া না থাকে , তবে নিজের পরিহিত কাপড়ই ধুইয়া লও ।

২৬। কোন স্থানে লোক বসাবস্থায় ঝাড়ু দিও না ।

২৭। ফলের খোসা বা বীচি অন্য লোকের করিও না এবং যেখানে সেখানেও ফেলিও না ; বরং নির্দিষ্ট এক স্থানে ফেলিও । উহাতে সবুজ সার পয়দা হয় ।

২৮। চাকু , কেঁচি , সূচ ইত্যাদি ধারাল বস্তুর দ্বারা খেলিও না । কারণ অসাবধানতাবশতঃ কোথায়ও লাগিয়া যাইতে পারে ।

২৯। তোমার বাড়ীতে কোন মেহমান আসিলে প্রথমে তাহাকে পেশাব পায়খানার স্থান জ্ঞাত করাইয়া দিও । অতঃপর মেহমান নৌকায় বা গাড়ীতে আসিলে মজুরী দিয়া নৌকা বা গাড়ীকে বিদায় কর । কেননা ইহাই ভদ্রতার উত্তম আর যদি ঘোড়ায় চড়িয়া বা নিজ গাড়ীতে আসিয়া থাকে , তবে তাঁহার ঘোড়া অথবা গাড়ী রাখার ব্যবস্থা করিও । মেহমানকে খাওয়াইতে গিয়া সামর্থ্যের বাহিরে বৃথা আড়ম্বর করিও না । কেননা , বৃথা আড়ম্বরে যথাসময়ে খানা দেওয়া যায় না । খানা যদি সাধারণও হয় , তবু যথাসময়ে খাইতে দাও । মেহমান বিদায় হইতে চাহিলে তাড়াতাড়ি নাশ্তার ব্যবস্থা করিয়া যথাসময়ে বিদায় দাও । মোটকথা , মেহমানের আরাম ও সুবিধার ব্যাঘাত যাহাতে না হয় সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখিবে ।

৩০। পায়খানা অথবা গোসলখানা হইতে বাহির হইবার পূর্বেই পায়জামার ফিতা আটকাইয়া বাহিরে আসিও । ফিতা ধরিয়া বা আটকাইতে আটকাইতে বাহিরে আসিও না , ইহা বড়ই অভদ্রতা ও দৃষ্টিকটু ।

৩১। তোমার নিকট কেহ কোন কথা জিজ্ঞাসা করিলে প্রথমে তাহার উত্তর দিয়া পরে নিজ কাজে লিপ্ত হও , নতুবা জিজ্ঞাসাকারীর অবমাননা করা ও মনে কষ্ট দেওয়া হয় ।

৩২। কথা বলিবার সময় বা কাহারো কথার উত্তর দিবার সময় পূর্ণরূপে স্পষ্টস্বরে কথা বলিবে , যেন প্রশ্নকারীর বুঝিতে কষ্ট না হয় ।

৩৩। কাহারো হাতে কোন বস্তু দিতে হইলে দূর হইতে নিক্ষেপ করিয়া দিও না , বরং নিকটে পৌঁছিয়া হাতে তুলিয়া দাও । নিক্ষেপ করিয়া দেওয়ায় তাচ্ছিল্য প্রকাশ পায় , পড়িয়া গিয়া ক্ষতিও হইতে পারে ।

৩৪। যদি দুই ব্যক্তি কোন কথা বলা বা লেখাপড়ার কাজে লিপ্ত থাকে , তবে তুমি তাহাদের মধ্যে আসিয়া কোন একজনের সহিত কথা বলিতে বা চেঁচাইতে আরম্ভ করিও না ; হাঁ , অনুমতি লইয়া প্রয়োজনীয় কথা বলায় কোন দোষ নাই ।

৩৫। যে ব্যক্তির সহিত তোমার কথা বলার প্রয়োজন , সে যদি কোন কাজে বা কথায় লিপ্ত থাকে , তবে তুমি তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া অমনি তোমার বক্তব্য আরম্ভ করিও না ; বরং সুযোগের অপেক্ষা করিয়া অনুমতি লইয়া কথা বল ।

৩৬। কোন বস্তু অপর ব্যক্তির হাতে দিতে হইলে সে মজবুত করিয়া না ধরিতে ছাড়িয়া দিও না , অনেক সময়ে বেখেয়ালে বিশেষ ক্ষতি হইয়া থাকে ।

৩৭। কাহাকেও পাংখা করিতে বা মাথায় ছাতা ধরিতে হইলে খুব সাবধানে পাংখা করিবে এবং ছাতা ধরিবে , যেন তাহার শরীরে না লাগে । পাংখা করার পূর্বে উহা ঝাড়িয়া মুছিয়া নিও । এত জোরে বাতাস করিও না যাহাতে অপরের অসুবিধা হয় ।

৩৮। খানা খাইবার সময় হাড্ডি , কাঁটা এদিক - সেদিক নিক্ষেপ করিও না , দস্তরখানার উপর অথবা কোন পাত্রে একত্র করিয়া রাখিয়া বিড়াল কুকুরকে দিও ; কেননা , তাহাদেরও হক আছে । তদ্রূপ তরকারীর খোসা বা বীচি যেখানে সেখানে ফেলিও না । উহা নির্দিষ্ট স্থানে ফেল যেন আবর্জনা হইতে না পারে ।

৩৯। দ্রুত দৌড়াইয়া অথবা ঊর্ধ্বমুখে পথ চলিও না । ইহাতে পড়িয়া গিয়া অংগহানি হইতে পারে ।

৪০। বই কেতাব বন্ধ করার সময় খুব সাবধানে বন্ধ করিও যেন প্রথম বা শেষ ভাগের পাতা মুড়িয়া না যায় ।

৪১। নিজ স্বামীর নিকট বেগানা পুরুষের প্রশংসা করিও না ; কেননা , কোন কোন পুরুষের মেজাজে ইহা বরদাশত হয় না ।

৪২। তদ্রূপ কোন বেগানা স্ত্রীলোকের রূপ - গুণের প্রশংসা তোমার স্বামীর নিকট করিও না ; হয়ত তোমার স্বামীর মন ঐ স্ত্রীলোকের প্রতি আসক্ত হইতে পারে এবং তোমার উপর হইতে মন উঠিয়া যাইতে পারে ।

৪৩। যে লোকের সহিত তোমার ঘনিষ্ঠতা নাই , তাহার সহিত সাক্ষাৎ হইলে তাহার বাড়ী - ঘর , পোশাক , অলংকার ধন - দৌলত ইত্যাদির কথা জিজ্ঞাসা করিও না।

৪৪। ঘর - দরজা পরিষ্কার - পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য মাসিক তিন দিন বা চার দিন নির্ধারিত করিয়া ঘরের ঝুল ধুলা - বালু , আবর্জনা পরিষ্কার করিও এবং বিছানাপত্র ঝাড়িয়া মুছিয়া যথাস্থানে পরিপাটি করিয়া রাখিও ।

৪৫। কাহারো সম্মুখস্থ ডেক্স অথবা টেবিলের উপর হইতে কোন পুস্তক অথবা কাগজ উঠাইয়া দেখা নিষেধ কেননা , কাগজে হয়ত কোন গোপনীয় কিছু লিখা থাকিতে পারে । তদ্রূপ পুস্তকের মধ্যে ঐ ধরনের কাগজ ইত্যাদিও থাকিতে পারে । অতএব , বিনা অনুমতিতে কোন বই বা কাগজ স্পর্শ করিলে মালিকের মনে কষ্ট হওয়ার কারণ হইতে পারে ।

৪৬। সিঁড়ির উপর দিয়া উঠানামা করিতে হইলে খুব সাবধানে এক পা এক পা করিয়া উঠানামা করিবে । মেয়েদের পক্ষে ত প্রতি কদমে এক সিঁড়ির বেশী অতিক্রম করা মোটেই বাঞ্ছনীয় নহে ; তদ্রূপ ছেলেপেলেদিগকেও সিঁড়িতে উঠানামার বিষয় খুব সতর্ক করিয়া দিও ।

৪৭। যে স্থানে অন্য লোক বসা আছে তথায় কোন কাপড় ঝট্‌কান বা পুস্তক ঝাড়া দেওয়া বা ধুলা বালি ফুঁক দিয়া পরিষ্কার করা অনুচিত ; কেননা , ইহাতে অপরের কষ্ট হইবে ; ইহা বড়ই বদ - অভ্যাস ।

৪৮। কাহারো রোগ - শোক , দুঃখ - কষ্টের সংবাদ নির্ভরযোগ্য সূত্রে না জানিয়া অপরের নিকট বলিও না । বিশেষ করিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আত্মীয় - স্বজনের নিকট মোটেই বলা উচিত নহে । কেননা , যদি ভুল সংবাদ প্রচার করিয়া থাক , তাহা হইলে উক্ত লোকের আত্মীয় - স্বজনেরা অনর্থক পেরেশান হইবে এবং তোমাকে তিরষ্কার করিবে যে , “ এই অশুভ সংবাদ কোন্ বদ - বখত প্রচার করিল । ”

৪৯। তদ্রূপ সামান্য অসুখের বা সাধারণ কষ্টের সংবাদ প্রবাসী আত্মীয় - স্বজনকে চিঠিপত্রে জানান উচিত নহে ।

৫০। কফ , থুথু , পানের পিক ইত্যাদি দেয়ালে , বেড়ায় বা কপাটের উপর ফেলিও না । তৈলাক্ত হাত বেড়ায় বা কপাটে মুছিও না বরং সাবান দ্বারা না হয় মাটি মাখিয়া ধুইয়া ফেল ।

৫১। খাওয়ার মজলিসে তরকারীর প্রয়োজন হইলে মেহমানের সম্মুখ হইতে পেয়ালা বা বাটী উঠাইয়া নিও না ; বরং অন্য পেয়ালায় করিয়া তরকারী আনিয়া দাও ।

৫২। কেহ চৌকিতে শোয়া বা পিঁড়িতে বসা থাকিলে তাহার নিকট দিয়া যাতায়াত করার সময় চৌকিতে বা পিঁড়িতে যেন ধাক্কা না লাগে , সেদিকে লক্ষ্য রাখিও ।

৫৩। চৌকির উপর দিয়া তাকের উপর হইতে কোন দ্রব্য নামাইতে বা উঠাইতে হইলে খুব সাবধানে উঠাইবে নামাইবে যেন শায়িত ব্যক্তির আরামের কোন ব্যাঘাত না ঘটে ।

৫৪। খানা - পিনার কোন দ্রব্য খোলা রাখিও না । এমনকি মেহমানের সম্মুখস্থ ঐ সকল খাদ্যও খোলা রাখিও না যাহা একটু পরে খাওয়া হইবে ।

৫৫। মেহমানের উচিত যে , পেট ভরিয়া গেলে সামান্য ভাত তরকারী যেন বাঁচাইয়া রাখে , নতুবা বাড়ীওয়ালা মনে করিতে পারে যে , মেহমানের খানা কম হইয়াছে । ইহাতে মেজবান ( বাড়ীওয়ালা ) বড় লজ্জা অনুভব করে ।

৫৬। যে সকল থালা - বাসন , হাড়ি - পাতিল একেবার শূন্য হইয়াছে , উহা আলমারি বা তাকের উপর উপুড় করিয়া রাখিও ।

৫৭। হাঁটা চলার সময় পা একটু উঠাইয়া উঠাইয়া কদম ফেলিও , হেঁচড়াইয়া হেঁচড়াইয়া চলিও না ; ইহাতে জুতা অতি তাড়াতাড়ি ক্ষয় পায় এবং দেখিতেও দৃষ্টিকটু লাগে ।

৫৮। চাদর , শাড়ী , ওড়না ইত্যাদি নেতড়াইয়া নেতড়াইয়া চলিও না ।

৫৯। কেহ যদি নিমক বা অন্য কোন সামান্য বস্তু চায় , তবে তাহা হাতে করিয়া আনিও না ; বরং কোন বরতনে করিয়া দাও । কেননা , হাতে হাতে দেওয়া অভদ্রতা ।

৬০। মেয়েদের সম্মুখে কোন প্রকার বে - হায়ায়ী বা অশ্লীল কথা বলিও না ; ইহাতে মেয়েদের হায়া - শরম লোপ পাইতে থাকে ।

Post a Comment

Previous Post Next Post