স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য
স্বামী - স্ত্রীর প্রথম দর্শনেই উভয়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক আকর্ষণের ন্যায় এক প্রকার আকর্ষণ এসে পড়ে । এতেই তাদের আন্তরিক মিল হয়ে থাকে । সে মুহূর্ত থেকেই তাদের অন্তকরণে এক প্রকার মধুর চিন্তার উদ্ভব হয়ে থাকে । নবজীবনের তরী গঠনস্পৃহা চিরতরে বিদায় গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যত জীবনের কর্তব্যাবলী নবরূপ ধারণ করে দেখা দেয় । তাদের অন্তকরণে এসে কর্তব্যের পথ উদ্ভাসিত করে তোলে । তখন পিতা - মাতা , ভ্রাতা - ভগ্নি ও আত্মীয় - স্বজন পরিত্যাগ করে তাদের উভয়ের মধ্যে নবসূত্র স্থাপন করে একে অন্যকে নিবিড়ভাবে ভালবাসতে আরম্ভ করে , ফলে তারা একে অন্যের চিরসঙ্গী হয়ে পড়ে ।
স্ত্রী স্বামীকেই তার একান্ত কামনার বস্তু বলে মনে করে , এরূপ মনে করাই স্বাভাবিক । এ আল্লাহরই ইচ্ছা । প্রথম মিলনের দিন থেকেই স্ত্রী তার স্বামীসেবা ও স্বামীর কুশল কামনা করতে আরম্ভ করে , এটা ওয়াজিব । জগতের সর্ববস্তু পরিত্যাগ করেও তারা ইহকালের ও পরকালের সঙ্গী স্বামীর খিদমতে লেগে যায় । পতিপ্রাণা স্ত্রী স্বামীর সৎ কাজে উৎসাহ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদান করে । এরূপে উভয়েরই জীবন ধন্য করে ।
এ বিষয়ে হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন , স্বামীকে অসন্তুষ্ট করলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন ।
“ যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও উদ্দেশ্যে সিজদা করার নিয়ম থাকত , তাহলে আমি স্ত্রীলোকদেরকে স্বামীকেই সিজদা করার নির্দেশ দিতাম । ”
স্বামী - স্ত্রীর কর্তব্য সম্বন্ধে আল্লাহ্ তায়ালা কোরআনে বলেছেন , পুরুষগণ নারীদের প্রতি এজন্যই ক্ষমতাবান যে , ( নারীর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন , আর এজন্যও তারা ক্ষমতাবান যে , তাদের ( পুরুষদের ) ধন - সম্পত্তি ( নারীদের জন্য ) ব্যয় করে ।
এ আয়াতের মর্মার্থ এ যে , পুরুষের পরিশ্রমলব্ধ টাকা পয়সা দ্বারা স্ত্রীর দেনমোহর দিতে হয় বলে স্ত্রীর ওপর স্বামীর আধিপত্য । আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন , “ নারীগণও স্বামীর প্রতি অনুরক্ত থাকে এবং তাদের গুপ্তাপ্ত রক্ষা করে আল্লাহর রক্ষণের সাথে । ” এ আয়াতের মর্মার্থ এটাই , সতী নারী স্বামীর ত্যাগ ও দয়ার দরুন তার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি করে এবং সাধ্য অনুযায়ী স্বামীর পূর্ণ খিদমত করে । সে নিজ গোপন স্থানকে অন্যের দৃষ্টি বা দর্শন থেকে আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী রক্ষা করে ।
একজন স্ত্রীলোক হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর কাছে হাজির হয়ে জিজ্ঞেস করল , “ হুজুর ! আমার প্রতি আমার স্বামীর কিরূপ হক ? ” তিনি বললেন -
১. পথে চলার সময় উটের পিঠের উপরও যদি কেহ স্ত্রীর সাথে কামভাব পূর্ণ করতে চায় , তা হলেও তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে হবে ।
২. স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোযাও রাখতে পারবে না ।
৩. স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী অন্যত্র গেলে ফিরে না আসা পর্যন্ত স্ত্রীর ওপর আযাবের ফেরেশতাগণ লা'নত বর্ষণ করতে থাকে ।
৪. স্ত্রী যদি স্বামীর মনোবাঞ্ছা পূর্ণ না করে স্বামীর নিকট থেকে দূরে থাকে , তা হলে যে পর্যন্ত স্বামীর কাছে ফিরে না আসবে , ফেরেশতাগণ লা'নত করতে থাকবে ।
৫. যে স্ত্রীলোক পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে , রোযা রাখে , পর্দায় থাকে এবং স্বামীর খিদমত করে , সে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে ।
৬. স্ত্রী যদি স্বামীর বিনা অনুমতিতে এক রাত্রির জন্যও অন্যত্র বাস করে , তা হলে সে ইবাদতে পাকা হলেও জাহান্নামের অতি নিম্নস্তর কারূন ও হামানের সাথে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে ।
৭. যদি কোন স্ত্রীলোক আসমান ও জমিনের বাসিন্দাদের বরাবর নেকী হাসিল করে , অথচ স্বামীকে কোন প্রকার কষ্ট দেয় , তা হলে আল্লাহ তায়ালা তার দু ' হাত ঘাড়ের সাথে ও দু ' পা শিকলে বেঁধে কদর্য চেহারায় আযাবের ফেরেশতার কাছে সোপর্দ করে দিবেন।
৮. যে স্ত্রী স্বামীর দেয়া কাপড় পেয়ে বেজার হয় , আল্লাহ তায়ালা তার ওপর বেজার হবেন । যে স্ত্রী স্বামীর মাল নষ্ট করবে বা চুরি করবে , তার ওপর সত্তর হাজার ফেরেশতা লা'নত করতে থাকবে ।
৯. যে স্ত্রী স্বামীর মেহমানদের সমাদর করে না , তার ওপর সমস্ত ফেরেশতা ও দুনিয়ার সমস্ত প্রাণী লা'নত করবে । স্ত্রী স্বামীকে বেজার করলে আল্লাহও সে স্ত্রীর ওপর বেজার হন , আর স্ত্রী স্বামীকে খুশী করলে আল্লাহও তার সে স্ত্রীর ওপর খুশী হন ।
১০. স্ত্রী যদি স্বামীকে এ ধরনের কথা বলে , যাতে স্বামী রাগ হয় , তা হলে স্ত্রীর নাম মোনাফিক ও মুশরিকের দলে লিখা হয়ে যায় ।
১১. আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন স্ত্রীলোকদের প্রথমে নামাযের বিষয় ও এরপর স্বামীর খিদমতের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবেন । তখন যদি কেহ বলে যে , তারা স্বামীর খেদমত না করে আল্লাহর ইবাদত করেছে ও হাজার হাজার রোযা রেখেছে , তা হলেও তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন ।
১২. হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন , আমি বেশি স্ত্রীলোকদেরকেই জাহান্নামবাসী দেখেছি । একজন সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন হে রাসূলুল্লাহ ! জাহান্নামে বেশী স্ত্রীলোক যাবে এর কারণ কি ? হযরত বললেন , “ এরা অপরকে গালিগালাজ করে থাকে এবং নিজের স্বামীর বহু না - শোকরী করে থাকে ।
হযরত ফাতিমার ( রাঃ ) -এর প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর নসীহত
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কন্যা ফাতিমাকে নিম্নলিখিত নসীহত করেছেন -
১. স্বামীগৃহে প্রথম প্রবেশ করার সময়ে “ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ” বলবে ।
২. শরীর পরিস্কার - পরিচ্ছন্ন রাখবে ।
৩. চোখে সুরমা ব্যবহার করবে ।
৪. মাথায় , শরীরে তৈল মেখে গোসল করবে ।
৫. স্বামীর সাথে সর্বদা হাসিমুখে সরল প্রাণে কথা বলবে এবং স্বামী যখন কোন কিছু বলবে , তখন তুমি বিন্য্র বদনে দৃষ্টি নিম্নগামী করবে ।
৬. দাসীর ন্যায় স্বামী সেবা করবে । প্রাণের সাথে তাঁকে ভালবাসবে ও সম্মান করবে ।
৭. ঘরে সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করবে ।
৮. তিক্ত ও অম্ল অধিক খাবে না ।
৯. যে অবস্থায়ই থাক , ধৈর্য সহকারে সাংসারিক কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করবে ।
আমাদের ওয়েব সাইটের বিষয়বস্তু অনুলিপি করা এবং এটি অন্য কোনও ওয়েবসাইটে পুনরায় প্রকাশ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এটি আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং সাবধান, আমাদের সাইটের লিখিত সামগ্রী কপি করবেন না।
যদি আপনার ডাউনলোড করতে সমস্যা হয় তবে দয়া করে মন্তব্য করুন বা ফেসবুক পেজে আমাদের সাথ যোগাযোগ করুন।
- ডিজাইনার: মামুনুল হক।
- সংস্থা: ইসলামিক পিএলপি ফাইল।
- ফাইল ফর্ম্যাট: জিপ সংরক্ষণাগার।
- ডিজাইনের ফর্ম্যাট: পিএলপি (পিক্সেলল্যাব প্রকল্প) [জেপিজি সংযুক্ত]।
- ডিজাইন সফটওয়্যার: পিক্সেলল্যাব।
- ডিজাইনের রেজুলেশন: আল্ট্রা এইচডি।
- ডিজাইনের রঙ: আরজিবি কালার।
- প্রিন্ট প্রস্তুত: হ্যাঁ।
- ডিজাইন সমর্থিত অ্যাপ্লিকেশন: পিক্সেলল্যাব ডার্ক।
- ডিজাইনের অবজেক্টের ধরণ: স্মার্ট অবজেক্ট।
- ডিজাইনের ধরণ: প্রিমিয়াম ডিজাইন।
- নকশা মূল্য: বিনামূল্যে।
- ডিজাইন কোড : I P F - 16